কলকাতায় আনন্দ ডেয়ারী এনেছে দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য

*

শ্রীজিৎ চট্টরাজ : কবি ভারত চন্দ্র রায় সেই অষ্টাদশ শতকে অন্নদামঙ্গল কাব্যে লিখেছিলেন,আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১ জুন নির্ধারিত করেছে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস। সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান দরকার।২০২২_২৩ এ ৪ শতাংশ দুধ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩০.৫৮ মিলিয়ন টন।সবচেয়ে বেশি উৎপাদন উত্তরপ্রদেশের ১৫.৭ শতাংশ। প্রথম পাঁচের তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ নাথাকলেএই সময়ে বার্ষিক বৃদ্ধির হার বেড়েছে ৮.৬৫ শতাংশ। দুধে উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষস্থানে পৌঁছে দেন কেরালার ভূমিপুত্র ভার্গিস কুরিয়েন। গুজরাটে কৃষক নেতা ত্রিভুবন দাসের দুগ্ধ সমবায়ে চাকরি। সেখান থেকে সুপরিকল্পিত পথে সাদা বিপ্লব করেছেন সদ্য প্রয়াত কুরিয়েন। বিষয়টি নিয়ে শ্যাম বেনেগ্যাল ছবি করেছিলেন মন্থন। স্মিতা পাতিলকে আমরা চিনেছিলাম সেই ছবি থেকেই ।

গুজরাটের পলসন ডেয়ারী গ্রামের দুধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করত সামান্য টাকার বিনিময়ে। সর্দার প্যাটেল এই শোষণের বিরূদ্ধে সমবায় আন্দোলন করেন। সঙ্গী হন কুরিয়ের। সময়টা ১৯৪৯। সমবায় গঠিত করে কৃষকদের কাছ থেকে সমবায়ের নামকরণ করেন আমূল। অর্থ অমূল্য। সেই পথেই হেঁটেছেন উত্তরপ্রদেশের ভূমিপূত্র ড: রাধেশ্যাম দীক্ষিত। সরাসরি গো পালকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করছেন দুধ।গড়ে তুলেছেন আনন্দ ডেয়ারী লিমিটেড। সংস্থার ট্যাগলাইন আনন্দ করো। প্রথমে সংস্থার নাম ছিল গোপালজি ডেয়ারী।

১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর সংস্থা দুধ দুধজাত পণ্যের উৎপাদন ও বিপণন শুরু করে। ২০১২ সাল থেকে পরিচিত হয় সংস্থা আনন্দ ডেয়ারী নামে। সই মূহূর্তে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে আনন্দ ব্র্যান্ড বিপণন শুরু হচ্ছে। পণ্যের তালিকায় আছে দুধ, পনির, ঘি, বিভিন্ন স্বাদের দই, রাবড়ি, লস্যি, চাচ, খোয়া, মাখন, পায়েস, মিল্ক শেক, ডেয়ারী হোয়াইটনার, ক্রিম ইত্যাদি ছাড়াও মধু, কুকি, রাস্ক, ম্যাথি, মিষ্টি, চিপস্, চা, কর্নফ্লেক্স, বুন্দি, চিনি , তেল, প্যাকেজিং জল, কুলফি,ও ওটসও বিপণন করছে।২০১৮ সাল থেকে এই পণ্যসম্ভার মার্কিন দেশেও সুনামের সঙ্গে রপ্তানি হচ্ছে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেশের ব্র্যান্ডেড ঘি নিয়ে এক সমীক্ষায় যুগ্মভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে আমূল ও আনন্দ ব্র্যান্ড।

সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার চেয়ারম্যান ড,: রাধেশ্যাম দীক্ষিত বলেন সেরা স্বাস্থ্যকর পণ্য হিসেব আনন্দযেমন মানে সঙ্গে সমঝোতা করে না তেমন কয়েকশ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। আগামীদিনের পশ্চিমবঙ্গে আমরা উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করব। দুধ উৎপাদক চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি সেরা দুধ সংগ্রহ করব। সংস্থার ব্যবস্থাপক পরিচালক সূরজ দীক্ষিত বলেন,ইতিমধ্যেই আমরা আনন্দ ব্র্যান্ডকে বিশ্বের কুড়িটি দেশে পৌঁছে দিয়েছি। পুজো ও উৎসবকে মাথায় রেখে সংস্থা বাজারে এনেছে পঞ্চামৃত। এই পণ্যে আছে দুধ, দই, ঘি মধু ও চিনির মিশ্রণ। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মন্দিরে যা প্রশংসনীয় হয়েছে। বাংলার ঘরে আনন্দ ব্র্যান্ড এখন শুধু পৌঁছে যাওয়ার অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *