পর্ব : ৮৪

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : গত কয়েকটি পর্বে জাপানের সেনাদের চিনা মেয়েদের বারাঙ্গনা বানানোর ইতিহাস শুনিয়েছি। এই পর্ব থেকে কয়েকটি পর্বে পিছিয়ে যাব প্রায় পনেরো’শ বছর আগে গ্রিসে। যদিও হোমারের লেখনীতে বারবনিতার কোনো উল্লেখ নেই। তাই বলে সেযুগে পতিতা বৃত্তি ছিল না এমন ভাবার কোনো মানে নেই। বরং মুদ্রার প্রচলন হওয়ার আগে থেকেই বেশ্যাবৃত্তি ছিল।

৬০০ খ্রিস্টাব্দে গ্রিক আইনবিদ সলোন।
ইতিহাস বলছে,৬ষ্ঠ শতাব্দীর শুরুতেই আইন প্রণেতা সলোন ( ৬৩৯_৬৫৯ খ্রিস্টাব্দ) এথেন্সে প্রথম পতিতালয় প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময় থেকে অনিয়ন্ত্রিত পতিতাবৃত্তি বন্ধ হয়। সলোনের উদ্দেশ্য ছিল কিশোর বয়স থেকেই যাঁরা প্রজননক্ষম হয়ে উঠছে তাঁদের যৌন শিক্ষায় পূর্ণতা আনতে সক্ষম করে গড়ে তোলা। কেননাসেই সময়ে সমাজের বিশিষ্ট ঘরের মেয়েরা এইসব কৈশোর পেরোনো যুবাদের ব্যবহার করত। ফলে যা ব্যভিচারের পর্যায়ে চলে যেত। এমনটাই ধারণা সমাজবেত্তাদের। নাহলে গ্রিক বুদ্ধিজীবী এথেনেস লিখবেন কেন , যে মহামতি সলোন, আপনি আমাদের উপকার করেছেন। আমাদের সদ্য তরুণেরা পিচ্ছিল পথে যাচ্ছে। সেখানে নির্দিষ্ট জায়গায় যৌনকর্মীদের রেখে তরুণদের যৌনশিক্ষায় শিক্ষায় করেছেন তা প্রশংসার যোগ্য।

জাপানি যৌনকর্মীদের গেইশা বলা হয়।
আর একটি বিষয় মনে রাখা দরকার, পতিতা ও রাজরক্ষিতাদের মধ্যে পার্থক্য ছিল। যদিও তাঁরা যৌনতার বিনিময়ে অর্থ নিত, কিন্তু রাজা বা রাজার উচ্চপদস্থ জনেদেরই শয্যাসঙ্গিনী হতেন। অনেকটাই জাপানি গেইশাদের মতো। প্রাচীন গ্রিসে প্রেম ও যৌন জীবন গ্রন্থের লেখক নিকোলাওস ও ভ্রিসিমটিজ ( অনুবাদ: আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, আহমেদ পাবলিশিং হ, ঢাকা) লিখেছেন,,,,,, গ্রিক ভাষায় হেটাইরা শব্দের অর্থ বন্ধু বা সঙ্গী। আর হেটারাই হচ্ছে সিম্পোজিয়ামে এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে পুরুষের নারী সঙ্গী। যাঁরা বৈধ স্ত্রী কন্যাদের পর্যায়ভুক্ত বা তূল্য নয় তাদের নৈতিকতার মান উঁচু হলেও শিক্ষার দিক থেকে ততটা অগ্রসর নয়।( চলবে)
আগামী পর্ব ৩ জানুয়ারি, সোমবার,২০২৫

*****