তিনদিন ব্যাপী কলকাতা জুয়েলারি অ্যান্ড জেম ফেয়ার পঞ্চম মেলা হল বিশ্ব বাংলা প্রাঙ্গণে

দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক: মধ্যযুগের ভারতীয় কাব্যতাত্ত্বিক বামনাচার্য লিখেছেন সৌন্দর্যম অলংকার। অর্থাৎ অলংকারের মধ্যেই কাব্যকে তুলনা করা হয়েছে নারী দেহের সঙ্গে। পুরাণে মেলে সতীর দেহত্যাগের পর যখন বিষ্ণুদেবের চক্রেদেহ বিচ্ছিন্ন করা হয অঙ্গের সঙ্গে মেলে স্বর্ণালংকার। ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে বিশ্বকর্মা ও ঘৃতাচীর নয় সন্তানকে বলা হয়েছে শিল্পীগোষ্ঠী। ধর্ম মঙ্গল কাব্যে নারীর আভরণের অষ্টালংকারের বিবরণ আছে। মাথায়, চুলে, নাকে, কানে, কণ্ঠে হাতের কব্জিতে, আঙুলে ও কোমরে পরিধানের। পরবর্তী সময়ে যুক্ত হয়েছে পায়ের অলংকার। চর্যাপদে তাই লিখিত হয়েছে উঞ্চা উঞ্চা পাবত তঁহিবসই সবরী বালী । মোরঙ্গী পীচ্ছ পরহিণ সবরী গিবত গুঞ্জরী মালী।। অর্থাৎ এখানে পাহাড়িয়া শবরী বালিকার গলার গুঞ্জা ফুলের মালা ও চুলে ময়ূরের পেখম দিয়ে সাজবার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে অভাব অনটনে ধ্বস্ত নিম্নবর্গের মেয়েদের আভরণের কথাই মনে করিয়ে দেয়।

বাংলার অলংকার শিল্পের সংস্কৃতি বহু পুরানো। এখানকার বাঙালি কারিগরের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত বিপণন। গড়ে উঠেছে এই অলংকার শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও শিল্পীদের সংগঠন ইনফরমা মার্কেটস ইন্ডিয়া আয়োজিত তিনদিনব্যাপী প্রিমিয়ার একটি মেলা কলকাতা জুয়েলারি অ্যান্ড জেম ফেয়ার হল কলকাতার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে। এবার ষষ্ঠ মেলা হল যেখানে যোগ দেয় ৬০ ২০০ র বেশি ব্র্যান্ড ও ২ হাজারেরও বেশি ডিজাইনের অলংকার। ছিল সূক্ষ্ম ডিজাইনের গয়না , রত্ন পাথর, ল্যাব উৎপাদিত হীরে, সোনা ও রূপার অলংকার। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার জনপ্রিয় দোকানগুলি অংশ নেয়ার মেলায়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্য সরকারের প্রধান সচিব ড: মনোজ পান্থ, পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বন্দনা যাদব সিজিজে ডব্লিউ এ-র সভাপতি অশোক বেঙ্গানী, সাওয়ানসুখা জুয়েলার্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ সাওয়ানসুখা, সংগঠন সম্পাদক প্রমোদ্ দুগার, সংস্থার পূর্বাঞ্চল চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখ, ইনফর্মা মার্কেটস ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর যোগেশ মুদ্রাস, সিনিয়র গ্রুপ ডিরেক্টর পল্লবী মেহরা ও গ্রূপ ডিরেক্টর পঙ্কজ শেংদে।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে দেওয়া হয় জুয়েলারি লেজেন্ডস অফ ইষ্ট ইন্ডিয়া অ্যাওর্ডস এই শ উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য। দ্বিতীয় দিনে কয়েকটি আলোচনা। বিষয় খুচরা বিক্রয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা, প্রাকৃতিক হীরে শিল্পের সমস্যা ও প্রয়োজনীয়তা।
সংগঠন সূত্রে বলা হয়েছে ভারতের অলংকার শিল্পের রপ্তানি বাজার ২০২৩ সালে ছিল ৪৩.৭১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের । যা বেড়ে ২০৩০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ১৩৩.৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরমধ্যে পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার ও ঝাড়খন্ড অন্তর্ভুক্ত। যা mulr বাজারের ১৫ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *