পর্ব : ৫৪
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : কমফর্ট স্টেশনের নামে জাপানি প্রশাসন যে বন্দী চিনা নারীদের নিয়ে হারেম তৈরি করেছিল তার কারণ হিসেবে যুক্তি দিয়েছিল সেই সময়ে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বেশি পরিমাণে ধর্ষণ হচ্ছিল। কিন্তু ধর্ষণ যে জাপানি সেনারা করছিল সেটা উল্লেখ হলো না। এই ঘটনার প্রতিকার হিসেবে জাপানি প্রশাসন ঠিক করে একটি সেনাদের যৌন খিদে মেটানোর স্টেশন তৈরি হলে যত্রতত্র ধর্ষণ কমবে।১৯৩০ সালে নাংকিং দখলের পর জাপানি সেনারা নাগরিকদের ওপর প্রবল অত্যাচার শুধু করায় সামরিক শৃংখলা ও নৈতিকতা রক্ষার জন্য সামরিক কর্তৃপক্ষ ১৯৩২ সালে এই কমফর্ট স্টেশনকে আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নেইi। অর্থাৎ আড়ত বেশি পরিমাণে চিনের বিন্ডিত মেয়ে সংগ্রহ।
জাপানি সেনাদের পছন্দ ছিল ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী বন্দী চিনা মেয়ে।
এরপর ক্রমাগত যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ায় জাপানি সৈন্যের যুদ্ধে যোগদান বাড়তে থাকায় যৌন ক্রীতদাসীর চাহিদা বাড়তে থাকল। ফলে ছলে বলে কৌশলে বেশি পরিমাণে স্থানীয় দালাল মারফত গৃহস্থের ঘর থেকে মেয়েদের তুলে আনা শিরুৎ হল।গড়ে তোলা হল জাপানি নারী সেনা। কাজ বলা হল যুদ্ধে পিছন থেকে সাহায্য করা। আসলে জাপানি সেনাদের যৌন সুখ দেওয়া। বিষয়টা একসময় প্রকাশ হয়ে পড়ায় সেনায় যোগ দেওয়ার প্রবণতা কমতে থাকায জোরজুলুম,মারধর করে মেয়েদের স্টেশনে তুলে আনার শুরু হল। জাপানি সেনাদের আবার বেশি বয়স্ক মেয়ে পছন্দ ছিল না। চাহিদা ছিল ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়ে। স্টেশন বললেওর আসলে ছিল কুঁড়েঘর। থাকার জন্য জঘন্য। কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা এলাকার পাহারা দিত জাপ সেনারা।
রামায়ণের যুগেও ছিল গণিকা সমাজ ।
কনকনে ঠান্ডায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে দিনে একটি মেয়েকে কমপক্ষে ৬০ জন জাপ সেনার মনোরঞ্জন করতে হত। সেনাবাহিনীর ডাক্তাররা নিয়মিত এসে মেয়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করত তারা কোনো যৌনরোগে আক্রান্ত কিনা। তবে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে কিম্মা আঁচড়ে কামড়ে সেনারা মেয়েদের যদিও ক্ষতবিক্ষত করত, তার চিকিৎসা হত না। কিছুদিন আগে জাপান প্রশাসন চিনের মেয়েদের বিরুদ্ধে জাপ সেনাদের এই কুকীর্তির জন্য চিন সরকারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আগামী পর্বে ফিরব রামায়ণ ও মহাভারতের যুগে। যেখানে সমাজে গণিকাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। রাজারা উপঢৌকন দিতেন এবং পেতেন সেরা গণিকা। ( চলবে)
আগামী পর্ব ২১ অক্টোবর, সোমবার