*
দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : দুর্ঘটনায় ভেঙেছে দেহের কোন হাড় ? ব্যাথা যন্ত্রণায কাতর,? লোকমুখে শুনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ছুটে যাচ্ছেন উত্তর চব্বিশ পরগনার মছলন্দপুর ঘোষপুরের চারাবটতলায়। সেখানে প্রায় ৮০ বছর বয়সী লক্ষ্মী মণ্ডল যিনি হাড়ভাঙা বুড়ি নামে পরিচিত তিনি দৈব চিকিৎসায় হার জুড়ে দিচ্ছেন।
প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভিড় হওয়ার আগেই দূর দূরান্ত থেকে রোগী ও আত্মীয় স্বজনরা আসছেন অলৌকিক চিকিৎসা শিবিরে।রোগীর ভাঙ্গা হাড়ে ফুঁ দিতেই মুশকিল আসান। এমনকি ব্যথা বেদনাও উধাও। রোগীকে সঙ্গে নিয়ে আসতে হয় একটি শিশিতে সর্ষের তেল আর কালো রঙের সুতো। হাড়ভাঙা বুড়ি তেলের বোতলে দেন ফুঁ। কালো সুতোয় বেঁধে দেন গাছে শিকড়। গলায় সেই মালা পরে নিলেই কেল্লা ফতে। তাঁর দাবি, বড় ডাক্তার হাসপাতাল ফেরত রোগীকেও তিনি সুস্থ করে দিচ্ছেন দৈব প্রক্রিয়ায়। তাঁর দাবি,তিন পুরুষ ধরে তিনি এই দৈব চিকিৎসা করছেন।
বুড়ির বাড়ির পাশে বসে হয়েছে মেলা। ঢালাও বিক্রি হচ্ছে তেল ও কালো সুতো।খবর আসতেই ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সহ সভাপতি সন্তোষ শর্মার নেতৃত্বে এক তদন্তকারী দল বিতর্কিত অঞ্চলে পৌঁছান । দলে ছিলেন বিজয়কৃষ্ণ , শেখ সিরাজ আলী, সৌরাষ্ট্র দাশ। রোগী সেজে বুড়ির কাছে নিজের ডান পা দেখান।টাকা দিলে তিনি নেন।অথচ দাবি করেছেন তিনি কোনো অর্থ নেন না।
দি ড্রাগস অ্যান্ড ম্যাজিক রেমিডিস আইন ১৯৫৪ অনুযায়ী দৈব চিকিৎসা করতে পারেন না। তেলপড়া , ঝাড়ফুঁক , তন্ত্রমন্ত্র শিকড়দিয়ে চিকিৎসা করা শুধু আইনি অবৈধ শুধু নয়, রীতিমত জেল জরিমানা বিধান আছে। স্থানীয় বাদুড়িয়া থানায় এই হাড় ভাঙা বুড়ির বিরূদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা অপ্রতুল বলেই এই অলৌকিকতার ফাঁদে পড়ছে সাধারণ মানুষ।পুলিশ প্রশাসনের ইচ্ছা না অনিচ্ছাকৃত অজ্ঞতার জন্য মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এমনটাই বললেন ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সহ সভাপতি সন্তোষ শর্মা।
সন্তোষ শর্মা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, অন্ধ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী কঠোর আইন ও তার বলবৎ করার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালকে সংগঠনের পক্ষে দাবিপত্র পেশ করা হয়েছে। বাদুড়িয়া পুলিশ এখনও কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা জানা যায়নি।