বেশ্যার বারোমাস্যা

পর্ব: ২৪

প্রাচীন যুগে গ্রিসের অভিজাত মহিলারা কমবয়সী সুন্দর চেহারার কমবয়সী পুরুষকে যৌনতার কারণে ব্যবহার করত।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: সমকামী প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনায় যেমন নারী আছে, তেমন আছে পুরুষ। আছে পুরুষ গণিকা। গ্রিসে একটা সময় পুরুষ নারীর যৌনতার উদ্দেশ্য ছিল সন্তান উৎপাদনের জন্য। শিশুদের গ্রিক পুরুষরা ব্যবহার করত যৌন আনন্দের জন্য। ফলে পুরুষ যৌনকর্মী ছিল সেযুগেও । যদিও সেযুগে যৌনতা সম্পর্কে পুরুষ যৌনকর্মীদের সম্পুর্ণ ধ্যান ধারণা ছিল না। পেশাদার যৌনকর্মী এখন ওয়েবসাইটে রীতিমত বিজ্ঞাপন দেয়। আমেরিকায় ও বিশ্বের বহু দেশেই পুরুষ যৌনকর্মীর চাহিদা বাড়ছে । ক্লায়েন্টের মধ্যেআছে মূলত মধ্যবয়সী পুরুষ ও মধ্যবয়সী নারী। কলকাতার কিছু অভিজাত পল্লীর রাস্তার মোড়ে এই পুরুষ যৌনকর্মীরা অপেক্ষা করেন ক্লায়েন্টের জন্য। বেশিরভাগ কলেজ ছাত্র। সহজে রথ দেখা কলা বেচার খেয়ালে তাঁরাএই পেশায় এসেছেন। মধ্য তিরিশের পুরুষও আছেন এই দলে। গালভরা নাম এদের জিগালো।

দিনে চাকরি বা পড়াশুনো, রাতে পুরুষ দেহ বিক্রেতা।

জিগালো একটি ফরাসি শব্দ ।১৯২০ নাগাদ গিগোলেট শব্দ থেকে জিগালো শব্দের উৎপত্তি। ক্লাব বা হোটেলে নৃত্যের প্রয়োজনে সহযোগী শিল্পীদের বলা হত। জিগালো নিয়ে আমেরিকায় বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রও নির্মাণ হয়েছে.। অন্যান্য দেশেও হয়েছে। গানের রেকর্ডও বাজারে মেলে। সমীক্ষায় দেখা গেছে মুম্বাইয়ের জুহু বিচে পুরুষ যৌনকর্মী ও মহিলা ক্লায়েন্টের দেখা মেলে। অনেক ছেলে দিনের বেলা চাকরি করেন সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর দেহদানের ব্যবসা করেন। অনেক মহিলার স্বামী বিদেশে থাকেন। সেক্ষেত্রে পরকীয়ায় সম্পর্ক করতে অনেক মেয়ে ব্ল্যাকমেলের ভয় পান। সেক্ষেত্রে পয়সা ফেকো, তামাশা দেখো নীতিতে বিশ্বাসী। কোনো ঝামেলা নেই। হোটেলে বা বাড়িতে ডেকে নেওয়া যায়। ম্যাসাজ বয় নামে একদল আছেন যারা দিব্যি ভালো ভালো হোটেলে খাওয়া , দামী জামাকাপড় মদ সিগারেট বকশিস হিসেবে পেয়ে থাকে। এখন অবশ্য সেক্স ডল এসে গেছে। মিলছে ব্যাটারি চালিত নরম রবারের পেনিস ডল । তবে যৌন খেলনা যে আধুনিকতার ফসল এমন ভাবার কারণ নেই।

রোমান সভ্যতায় প্রাচীনতম সেক্স টয় মিলেছে পাহাড়ের গুহায়।

ইতিহাস বলছে, জার্মানির প্রত্নতাত্ত্বিকরা ২৮ হাজার বছর আগের পুরানো পাথরের পুরুষাঙ্গের মত বস্তু পেয়েছেন যা সেযুগে যৌন আনন্দের জন্য ব্যবহার হত। পুরাতত্ববিদেরা উত্তর ইংল্যান্ডের ভিন্ডোলান্ডা রোমান দুর্গ এলাকায় একটি প্রাচীন কাঠের দন্ড মিলেছে। যেটি বিশ্বের প্রাচীনতম সেক্স টয়। নিউ ক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের সিনিয়র লেকচারার ড: রব কলিন্স জানিয়েছেন, প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্যের মানুষ এমন মসৃণ কাঠ ও পাথরের সেক্স টয় ব্যবহার করতেন। বিষয়টা তখনকার সমাজে স্বাভাবিক ছিল।( চলবে)

পর্ব: ২৫ আগামী ৮ জুলাই , সোমবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *