দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক: একদিকে বিশ্বজুড়ে দূষণ বাড়ছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের বহু দেশ। নদীতে বাঁধ দিয়ে জলাধার বানানো আর গাছ কেটে নগর উন্নয়নে ব্যস্ত সব দেশ। কিন্তু এই দূষণ কতটা বিষ বৃক্ষে পরিণত হচ্ছে সেদিকে বিজ্ঞানীরা বারবার সচেতন করলেও রাষ্ট্রনেতারা থাকছেন উদাসীন। ক্রমশ পৃথিবী উত্তাপে জ্বলছে। কমছে ভূগর্ভে জলের স্তর। আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে দেশে দেশে। ভারত তথা বাংলাতেও তার প্রতিক্রিয়া ঘটছে। চাঁদিফাটা গরমে হচ্ছে হিট স্ট্রোক। গবেষণা বলছে একবার হিট স্ট্রোকে বেঁচে গেলেও তাঁদের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে দ্বিগুণ। বিশ্বজুড়ে প্রতি হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছেন প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ। এত সরকারি পরিসংখ্যান। আসল সংখ্যা কত বলা সম্ভব নয়। বাংলাতেও চড়ছে পারদ।। গত সপ্তাহে টানা আটদিন বাংলা তথা কলকাতায় তাপমাত্রা শঙ্কার কারণ হয়ে উঠছে। দক্ষিণ বঙ্গে আগামী চারদিন আরও তাপপ্রবাহ বাড়বে।১৮ টি জেলাতেই সতর্কবাণী জারি হয়েছে।
এই পরিস্থিতি তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতাপ সম্পর্কিত অসুস্থতা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। হিট স্ট্রোকে শরীরের তাপমাত্রা প্রায়ই ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়। মাথা ঘোরা, দ্রুত হৃদ স্পন্দন বেড়ে যাওয়া এবং ত্বক শুষ্ক হয় বিভিন্নঅপরাধমূলক উপসর্গ ভোগায়। দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যখন ব্যাঘাত প্রাপ্ত হয়।
কলকাতা ভরসা ডি হাসপাতালের কনসালটেন্ট জেনারেল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক শুভাশিস ঘোষ , হিট স্ট্রোক মোকাবিলায় সচেতনা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন , হিট স্ট্রোক একটি গুরুতর অবস্থা যা অবিলম্বে সমাধান না করলে বিধ্বংসী পরিণতি হতে পারে। লক্ষণ ও উপসর্গ অনুধাবন করে প্রাথমিক সুরক্ষা হিসেবে হাইড্রেটেড থাকা, উপযুক্ত হালকা রংয়ের ঢিলেঢালা সূতির পোশাক পরা এবং সর্বোপরি রোদ এড়িয়ে চলা জরুরি। উপসর্গের মধ্যে ১০৩ ডিগ্রি জ্বর, দ্রুত হৃদ স্পন্দন, মাথাব্যথা বমিবমি ভাব মাথা ঘোরা, চোখে অন্ধকার দেখা শুষ্ক ত্বক সনাক্ত করলেই অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। যার ফলে গুরুতর পরিণতি এড়ানো সম্ভব। সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া , হালকা পোশাক পরিধান করা বাইরে থাকলে ছায়া খোঁজা, ভারী কাজ থেকে সর্বোচ্চ গরমে বিরত থাকা, পার্কিংয়ে গাড়িতে শিশু বা পোষ্য প্রাণীদের বেশিক্ষন রাখা , বয়স্কদের বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসায় আছেন তাঁদের ঠান্ডা পরিবেশে রাখা, তাঁরা হাইড্রেটেড আছেন কিনা লক্ষ্য রাখা ও চিকিৎসকের সঙ্গে সংযোগ রাখা প্রয়োজন। হঠাৎ নেতিবাচক পরিস্থিতি দেখা দিলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোদ থেকে সরিয়ে ছায়ায় নিয়ে ভেজা ঠান্ডা কাপড়ে মুড়ে দেওয়া দরকার। এরপর দ্রুত চিকিৎসককে খবর দেওয়া। ডিসান হাসপাতালের এই পরামর্শ সামাজিক দায়িত্বকে স্মরণ করতে।