পর্ব :১৭২

প্রাচীন গ্রীসে বালকদের সঙ্গে গ্রীক পুরুষদের সমকামিতা ছিল সমাজ স্বীকৃত।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : ৪র্থ শতাব্দীর শেষে গ্রীসে বিদ্যালয় বিষয়টির প্রচলন শুরু। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে, তার আগে তরুণ ও বালকদের কোথায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো? বিদ্যালয়ে ছিল মৌলিক শিক্ষার ব্যবস্থা। পাঠ, লিখন, গণিত, সঙ্গীত। কিন্তু দর্শন শিক্ষার বিদ্যালয় ছিল আলাদা। প্রশ্ন, সামাজিক জীবনের গোপনীয়তা, রাষ্ট্রের কার্যাবলী, গুণ ও নীতিমালা, এবং জীবনের বিপদ আপদের শিক্ষা তাহলে কোথায় দেওয়া হতো একজন আনকোরা যুবক কিভাবে একে কারও সাহায্য ছাড়া পরবর্তী জীবনের এই জরুরি বিষয়গুলি সম্পর্কে জ্ঞাত লাভ করত?

বিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের বপরিবর্তে গুরু দক্ষিণা ছিল যৌনতা।
অর্থাৎ কারো না কারো সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। যা পিতার দ্বারা সম্ভব নয়। পিতা সারাদিন ব্যস্ত রাষ্ট্রীয় কাজে। মা নিতান্তই ঘরণী। তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।সেযুগে গ্রীস পরিবারে ছিল না পারস্পরিক সম্প্রীতি। ফলে পুরুষেরা বাইরের জগতে বালকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে আকর্ষিতহতে শুরু করে। একজন বয়স্ক পুরুষের দায় বর্তায় তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা একজন কিশোরকে মানসিকভাবে পরিণত করে তোলার। বিনিময়ে পুরুষেরা সেই বালকদের সৌন্দর্য, শক্তি, ও উদ্যমের উপভোগ করার তাড়না কাজ করে। এভাবেই দুজনের নিবিড় সংযোগ গড়ে ওঠে।

এথেন্সে প্রাচীন যুগের ভাস্কর্য।
মনে রাখা দরকার আদিম যুগে নিজ গোত্রের মানুষকে ভক্ষণ করার্ট এক রীতি ছিল। তবে সুবালক প্রেমের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু রীতি ছিল। এই ধরণের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়স্ক ব্যক্তিকে এরাষ্ট্রেস বার প্রেমিক এবং বালককে বলা হতো এরোমেনোস বার প্রিয়তম। বালকের বয়স বারো থেকে আঠেরো বছর বয়সের মধ্যে। এই বয়:সীমার চাইতে কম বা অধিক বয়সী কোন বালকের সঙ্গে সম্পর্ককে স্বাভাবিকভাবে আপত্তিকর বলা হতো না। (চলবে)
পরবর্তী পর্বে আগামী ১২ ডিসেম্বর, শুক্রবার,২০২৫

