বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব:১৬৩

ভারতীয় তন্ত্রশাস্ত্রে বিষকন্যা।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: গত পর্বে জানিয়েছিলাম , বিদেশি এক গল্পে নায়িকা একজন বিষকন্যা। তবে সে কোনও গণিকা বা গুপ্তচর নয়। রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র থেকেও অনেক দূরে। তাঁকে দিয়ে কারও কোনো ক্ষতির সম্ভাবনাও লেখক লেখেননি। বহু গুণে গুণান্বিত এই বিষকন্যা লেখকের অনুগ্রহে পেলেও বাস্তব ছিল ভিন্ন।

লেখক ড : গৌরীশঙ্কর দে বিষকন্যা নিবন্ধে লিখেছেন, কাম যেমন মানুষের আদিম প্রবৃত্তি , তেমনি গণিকাবৃত্তি পৃথিবীর আদিমতম জীবিকা। চতুর্বেদ, রামায়ণ, মহাভারত , অষ্টাদশ পুরাণ, তন্ত্রশাস্ত্র থেকে এর ইঙ্গিত মেলের। বিপুল সংস্কৃত সাহিত্যে, মন্দির ভাস্কর্যে আছে ইন্দ্রিয়পরায়ণ জীবনের নানা প্রতিফলন।

মহাভারতেও বিষকন্যার উল্লেখ আছে।

মহাভারত- এ বারবণিতাঅর্থে প্রকাশসর্বগণ্যা শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় । বিষকন্যা নির্মাণ পর্ব ছিল কৌতুহলোদ্দীপক। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী কতগুলি গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থানজাত জাতিকারাই হতে পারত বিষকন্যা।গ্রহ -নক্ষত্রের অবস্থান গণনা করে দিতেন বিশিষ্ট পুরোহিতরা। রাজা, মন্ত্রী, আমত্য, প্রশাসক প্রধানেরা দেশের সব মেয়েদের সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতেন।

বিষকন্যা নির্মাণ ছিল এক কঠোর পদ্ধতি।

নির্বাচিত কন্যাদের বিষকন্যা হিসেবে গড়ে তুলতে শাস্ত্র ও তার প্রয়োগবিধি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হতো। শিক্ষা দেওয়া হতো গীত বাদ্য, নৃত্য, নাট্য , অক্ষর বা লিপিবিদ্যা, চিত্রকলা, বেণু, বীণা, মৃদঙ্গ, পরিচিত জ্ঞান, গন্ধযোগ প্রস্তুত, মাল্য সম্পাদন অঙ্গমর্দন, বৈশিক কলা। শেখানো হতো গুপ্তচর বিদ্যার নানা কৌশল, অস্ত্রচালনা, বশীকরণযোগ্য ঔষধি প্রদান ছাড়াও কামশাস্ত্রের দুই ধারা, তন্ত্র ও আবাপ নিপুণভাবে অভ্যাস করানো হতো।( চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী সোমবার ৯ নভেম্বর,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *