জৈন সমাজের আত্মজাগরণের এসেন্স অফ সেন্সাস প্রদর্শনীর

*****

দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : নানা ভাষা নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান।কবির এই মন্তব্য কতটা বাস্তবে প্রতিফলিত তাই নিয়ে বিতর্ক করাই যায়। প্রাচীন বাংলায় ছিল না আর্য ধর্মীয় হিন্দুত্ববাদ। বিভিন্ন লৌকিক ধর্ম,নথি ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম ও জৈন ধর্মের বিস্তৃতি চিল্ট বাংলায় ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায়ের তাঁর বাঙালিত্ব ইতিহাস আদি পর্ব গ্রন্থের ৩০৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, জৈন , আজীবক ও বৌদ্ধ ধর্মের পূর্বাভিযানকে আশ্রয় করিয়াই প্রাচীন বাংলায় আর্য ধর্মকর্মের প্রাথমিক সূচনা ও বিস্তার।এই তিন ধর্মমতই বেদবিরোধী , বেদের অপৌরেষেয়ত্বে অবিশ্বাসী, কিন্তু ইহাদের প্রত্যেকটিই মূলত আর্যধর্মাশ্রয়ী। এই তিন ধর্মের মধ্যে আবার জৈন ও আজীবক ধর্মের মধ্যেই কৌম বাঙ্গালীর প্রথম আর্যধর্মপরিচয়।

জৈন ধর্মের ২৪ জন গুরুতর শেষতম মহাবীর। জন্ম ও মৃত্যু বিহার ও ঝাড়খন্ডে হলেও ষষ্ঠ শতকে গুজরাটে জৈন ধর্ম প্রসারিত হয়। গুজরাটের পালিতানা শংখেশ্বর এবং তারঙ্গ অঞ্চল জৈন তীর্থস্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতায় দক্ষিণ কলকাতায় প্রবাসী গুজরাটির সমাজের এক অংশ যাঁরা জৈন ধর্মে দীক্ষিত তাঁরা গড়েছেন রাষ্ট্রসন্ত পরম গুরুদেব শ্রী নাম্রমুনি মহারাজের স্মরণে এক প্রার্থনা মন্দির। জৈন ছাতুমাস অর্থাৎ বর্ষাকালের চারমাস জৈন সম্প্রদায়ের দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনীরা ধর্মীয় প্রচারে না গিয়ে একস্থানে অবস্থান করে ধর্ম তিত্বর প্রচার করেন। আষাঢ় মাসের শুক্লা একাদশীর থেকে কার্তিক মাসের শুক্লা একাদশীর পর্যন্ত এই পর্বে পোকামাকড় সহ বিভিন্ন জীব প্রজনন বাড়ে। সেক্ষেত্রে পায়ের চাপে যাতে তাদের মৃত্যু নয় হয় তাই এই পরব। ভক্তরা এই চারমাস গুরু ওর গুরুমাদের সেবার দেন। উপবাস করেন, দান ধ্যান করেন।

দক্ষিণ কলকাতার মন্দিরে মুম্বাই থেকে আসেন দিব্যতা জী মহাসতীজী। জৈন সম্প্রদায়ের জন্য তিনি এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। এসেন্স অফ সেন্সর। অর্থাৎ চেতনার সুবাস।মূলত পাঁচ ইন্দ্রিয়ের ওপর সংযম ও চেতনার গভীর সংযোগ আবিষ্কারের মার্গ হিসেবে। আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করে গড়ে তোলা হয় এই প্রদর্শনী। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে আধ্যাত্বিক চেতনার এই প্রদর্শনী।

বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন, ঊষা বেনর আভালানি পাইভার, কিরণ বেন , প্রদীপ ভাই বেলাওয়ালা মাতুশ্রী জয়াবেন জয়ন্তিলাল আজমেরা। উপস্থিত ছিলেন যোগেশ জি কানকারিয়া, প্রদীপ বেলাওয়ালা, বুলবুল শাহ,রূপ চন্দগি সাওয়ানসুলা, রবীন্দ্র ভাগানি,চন্দ্রেশ মেঘানি, অশোক তুরাখিয়া, অশোক বাসানি, ঋষভ সি কোঠারি, দীনেশ ঠাক্কার ও রুচিকা গুপ্ত সহ প্রায় ৬০ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *