হ্যাংলাথেরিয়াম এখন কলকাতার উত্তরে, উত্তুরের হাওয়া বইবার আগেই এসে গেল দমদমে

****

দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : সত্যিকারের একনম্বর জনপ্রিয় ফুড বলে এদেশে কিছু থাকে, নির্ঘাত বিরিয়ানি। আছে সুন্দরী রমণীর হাতের সরু আঙ্গুলের মত বাদশাহী চাল,শিশুর গালের মত নরম আলু, আর পছন্দের এক টুকরো মাংস। বাড়তি পাওনা একটি ডিম। বেশ কয়েকবছর ধরে বাঙালির খাদ্যপ্রীতির ধারার প্রথম স্থান নিয়েছে বিরিয়ানি।

ভাত -মাংসের যৌথ সংগত ইতিহাসে বহু প্রাচীন। এদেশে বৃহদারণ্যক উপনিষদে যেমন ষষ্ঠ অধ্যায়ের চতুর্থ ব্রাহ্মণের ১৮ নম্বর শ্লোকে উল্লেখ আছে চাল মাংসের রন্ধন কথা। তেমনই কিছু পরে রামায়ণে পাই এমন এক রেসিপি। নাম মাংসভূতদানা। সঙ্গে থাকত কিছু মশলা ও সবজি। সবই মিলত ভারতে। মহাভারতে ডালিমের রসে সিঞ্চিত মাংসে ঘি তেজপাতা, হরেক মশলা মাখানো কাবাব তৈরির উল্লেখ আছে।

বৈদিক সংস্কৃতিকে রুখে বৌদ্ধ ও জৈন সংস্কৃতির প্রভাব বাড়তেই বোধহয় এই পলান্ন খাদ্যের ভাটা পড়ে।মোঘল সাম্রাজ্যের বিকাশ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মোঘলাই খানার হদিশ বাঙালি হিসেবে যে পেয়েছি স্বীকার করতে বাধা নেই। ক্লাস এইটের ছাত্র সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন ফেলুদার ভাইপো হিসেবে তপেশরঞ্জন মিত্তির না হয়ে তোপসে হয়ে যান ,তখন কে জানত সিধু ওরফে তোপসে পরিণত বয়সের মগোজাস্ত্রে শান দিয়ে চাটার্ড একাউন্টেন্ট হবেন । তাঁর প্যাশন হবে রন্ধন । গবেষণাগারে চোষ্য লেহ্য পেয়র ওপর এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে খুলবেন নিজের রেস্তোরাঁ। সেদিনের ভজহরি মান্না থেকে মোঘলাই খানার হ্যাংলা থেরিয়াম।দক্ষিণের ভূমি জয় করে এখন আদিত্য গ্রুপের কর্ণধার অনির্বান আদিত্যর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে মুঘল ঘরানার প্রতিষ্ঠা করলেন সুনন্দা ব্যানার্জি।

আভিজাত্যে লখনউ বিরিয়ানি , হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানির পাশে কলকাতার বিরিয়ানি যেন নেহাত ব্রাত্যজন। কিন্তু আলুর যে কি ভ্যালু কে জানত? পর্তুগিজ আমাদের শিখিয়েছে আলুকে কিভাবে ব্যবহার করতে হয়। বাঙালি মাংসের সাইজ একটু ছোট হলেও মেনে নিতে রাজি, কিন্তু বিরিয়ানিতে আলু মাস্ট। মঙ্গলে ঊষা , বুধে পা। যথা ইচ্ছা, তথা যা। সম্ভবত খনার বচন শিরোধার্য করে দক্ষিণের সুনন্দ ব্যানার্জি আর দমদম ডায়মন্ড প্লাজা মলের বিপরীতে অনির্বাণ আদিত্য নিজেদের বহুমুখী ব্যবসার বাইরে এসে রসনা নির্মাণের ব্যবসায় যুক্ত হলেন। থাকছে হরেক কাবাব আর বিরিয়ানি। বৈশিষ্ট্য, বিরিয়ানি হচ্ছে হেল্থ ফ্রি। স্বাদ ও গন্ধের যুগলবন্দী, সঙ্গে সেরা চাল, মশলা ও মাংস। হ্যাঁ থাকছে আন্ডার রোল। মুচমুচে ময়ানে শ্বেতশুভ্র পরটার কোলে নরম কাবাবের শয্যা। প্রতি কামড়ে বিস্ময়। তবে সাবধান। নেশা ধরে গেলে লোকে হ্যাংলা বলতে পারে। হ্যাংলাথেরিয়া কিন্তু আপনার পাশে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *