পর্ব: ১৩৫

কামসূত্রে ব্যভিচারের বিরুদ্ধে একদিকে কঠোর নির্দেশ , অন্যদিকে কিছু নির্দেশ ব্যভিচারের উৎসাহও যোগাতো।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : বৈদিক যুগের সময় থেকেই যে ব্যভিচারের চল ছিল সেটা নিশ্চয়ই আগের বেশ কয়েকটি পর্ব পড়ে জেনেছেন। কামসূত্রে যেসব নির্দেশ বাৎস্যায়ন দিয়েছেন সেখানে সমাজকে সতর্ক থাকার কথা বলা হলেও এমন কিছুট নির্দেশ আছে যা ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়। এই শাস্ত্রে বেশ্যা সম্ভোগের পদ্ধতি সম্পর্কে যেমন আলোচনা আছে তেমন বেশ্যারা কিভাবে গ্রাহকদের বশীকরণ করবে সেটাও বলা হয়েছে।

বৈদিক যুগে গণিকাদের শ্রেণীভেদ ছিল।
গণিকা তাদের শ্রেণীগত উৎকর্ষতার বিচারে সমাজের ব্রাহ্মণ সমাজকে কিভাবে উৎকোচ দেবে তারও স্পষ্ট নির্দেশ আছে। সর্বোত্তম শ্রেণীর গণিকাদের নির্দেশ আয়ের টাকা থেকে মন্দির স্হাপন, সরোবর খনন , সেতু নির্মাণ, ব্রাহ্মণদের গীতা দান, দেবপূজার আয়োজন। এরপর রূপা জীবী। তাদের জন্য নির্দেশ সকল অঙ্গে অলংকার পরিধান, বৃহৎ গৃহ নির্মাণ, মহার্ঘ কুম্ভ, পরিচারক দিয়ে গৃহসজ্জা করা। আর এক ধরণের গণিকা কুম্ভদাসী। এদের নির্দেশ সর্বদা সাদা পোশাক পরা, নিরন্তর পানভোজন করা, সুগন্ধী পান চিবানো এবং অবশ্যইঅঙ্গ জুড়ে অলংকার পরা।

অর্থশাস্ত্রের অর্থ আসলে রাষ্ট্রনীতির শাস্ত্র। সেখানে গণিকা সম্পর্কেও কিছু প্রশাসনিক নির্দেশ ছিল।
সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও রমলাদেবী তাঁদের লিখিত গ্রন্থ ভারতীয় সমাজে প্রান্তবাসিনী গ্রন্থে ১৩২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে অর্থশাস্ত্র বলতে বোঝাতো গণিকাধ্যক্ষ ইনি কোনো গণিকাকে গণিকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বলতে গেলে লাইসেন্স বাবদ হাজার মুদ্রা দেওয়ার নির্দেশ দিতেন গণিকা যদি দেশান্তরে যায় বা প্রয়াত হলে তার কন্যা বা ভগ্নী কাজ করবে ও দেশান্তরী বা সম্পত্তি ভোগের অধিকার পাবে। অনুপস্থিত গণিকা চাইলে তার বিকল্প হিসেবে কাউকে মনোনীত করতে পারতেন। (চলবে)
পরবর্তী পর্ব আগামী সোমবার ৪ আগস্ট,২০২৫
