২৮ শে ২৮ বর্ষ পূর্তি পালন করল নৃতাল চন্দ ড্যান্স সেন্টার

*

দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : মানব জীবনের বিবর্তন ঘটে চলেছে সুর লয়, ছন্দের যৌথ বিস্তৃতিতে। বৈদিক সূত্রে স্বয়ং দেবরাজ ইন্দ্র ছিলেন নিজেই নৃত্যশিল্পী। রামায়ণের দুই মূল চরিত্র রাম ও রাবণ দুজনেই যদি অনার্য ও আর্য সংস্কৃতির বাহক হয় থাকেন দুজনেই ছিলেন নৃত্যশিল্পী এমনটাই বলা আছে রামায়ণে অপ্সরাদের নৃত্যের কথা কে না জানে। বাৎসায়নের কাম কলার অন্তত আটটি কলা সঙ্গীত নৃত্যের সঙ্গে সংযুক্ত। গীতনৃত্য, বাদ্য, নাট্য, আলেখ্য, নেপথ্য প্রয়োগ, ছন্দোজ্ঞান , ব্যয়ামিকী বিদ্যাজ্ঞান। চর্যাপদের যুগ পেরিয়ে রবীন্দ্রনাথ ও উদয়শঙ্করের নৃত্য নৈপুণ্য সৃষ্টির এক কালজয়ী ইতিহাসের ভাগীদার বাঙালি। উত্তাল যুগের শম্ভু ভট্টাচার্য তো কিংবদন্তি।

বিখ্যাত পদার্থবিদ ফ্রিতজফ ক্যাপ্রা তো কোষীয় কাঠামোর মধ্যে পরমাণু এবং অণুর ছন্দময় উপস্থিতি নটরাজের নৃত্যকেই প্রতিফলিত করে বলে জানিয়েছেন। এককথায় নটরাজের নৃত্য শৈলী ও কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার সমান্তরাল মিল বিজ্ঞান স্বীকার করছে। সুতরাং বঙ্গতনয় সৌরভ চন্দ ২৮ বছর আগে নৃতাল চন্দ ড্যান্স সেন্টার গড়ে তোলেন বাঙালিকে নৃত্য সংস্কৃতির ধারার ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প নিয়ে তার প্রশংসা না করলেই নয়। রবিবার শিক্ষায়তনের ২৮ বছর পূর্তিতে উত্তর কলকাতার মোহিত মৈত্র মঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো ২৮ শে ২৮ । অনুষ্ঠানের অতিথিরা ছিলেন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী ইন্দ্রানী দত্ত, মালবিকা সেন , সোনালী চৌধুরী, ব্রততী চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধায়ক মদন মিত্র। অনুষ্ঠানে শিক্ষায়তনের ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও নৃত্য পরিবেশন করেন সোনালী চৌধুরী।

নৃতালচন্দ ড্যান্স সেন্টারের প্রাণপুরুষ সৌরভ চন্দ বলেন ,২৮ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান পালনে আমরা ২৮ তারিখটিকেই বেছে নিয়েছি। এই দীর্ঘ সফরে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের যেমন পারদর্শী করেছি , নিজেও শিখেছি। আমরা নতুন লোগোও উন্মোচন করলাম। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় রবীন্দ্র সঙ্গীতের ওপর আধারিত নৃত্যের মধ্য দিয়ে। পরিবেশিত হয় মীরাবাঈ নৃত্যনাট্য। অভিনয়, নির্দেশনা , মঞ্চ পরিকল্পনা, আলোকসম্পাত ও পোশাক বিন্যাসে চরম পেশাদারী নৈপুণ্য দেখে দর্শক মোহিত মঞ্চে মোহিত হয়ে পড়েন। সোনালী চৌধুরীর শ্রী চৈতন্য নৃত্যনাট্যে বিষ্ণুপ্রিয়ার বিয়োগ যন্ত্রণার সঙ্গে একাত্ম হয়ে পড়েন দর্শক। কচিকাঁচা থেকে তরুণদের আধুনিক নৃত্যও ছিল আকর্ষণীয়। অন্যতম আর এক আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানে ছিল অভিনবত্ব। , অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে বারোজন প্রবীণ ও প্রবীণরা পরিবেশন করলেন কোরিওগ্রাফার সৌরভ চন্দের নির্দেশনায় নৃত্যশৈলী। অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে জয় হো নৃত্য আবৃত্তির মাধ্যমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *