দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : ঈদের অর্থ । কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ১৩৩৩ সালে ১৯ চৈত্র লিখেছেন, শত যোজনের কত মরুভূমি পারায়ে গো, কত বালুচরে কত আঁখিধারা ঝরায়ে গো, বরষের পরে আসিল ঈদ! ভিখারীর দ্বারে সওগাত বয়ে রিজওয়ানের, কণ্টক বনে আশ্বাস এনে গুল বাগের, সাকীরে জা মের দিলে তাগিদ ইসলাম বলে, সকলের তরে মোরা সবাই, সুখদুখ সম ভাগ করে নেব সকলে ভাই, নাই অধিকার সঞ্চয়ের। কারো আঁখি জলে কারো ঝাড়ে কিরে জ্বলিবে দীপ? দুজনার হবে বুলন্দ নসিব, লাখে লাখে হবে বনসিব? এ নহে বিধান ইসলামের।।
সেকথারই অক্ষরে অক্ষরে পালন করল মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। থানা চত্বরে রবিবার দুপুরে প্রায় ২০০পথ ভিক্ষুদের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দিল মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের উদ্যোগে এই মানবিক দায়বদ্ধতার নিদর্শন দেখল মঙ্গলকোটবাসী । স্থানীয় ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিভিক পুলিশদের তদারকিতে তাঁদের বাড়ি থেকে টোটোতে নিয়ে আসা হয় থানা প্রাঙ্গনে। মহিলাদের শাড়ি , পুরুষদের লুঙ্গি সহ অন্যান্য বস্ত্র তুলে দেন মঙ্গলকোট থানার আই সি মধুসূদন ঘোষ। তিনি বলেন, পুলিশের সামাজিক দায়বদ্ধতার অন্যতম বিষয় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। পথ ভিক্ষুকরাও পুলিশের এই কাজে আপ্লুত। ইদু শেখ ও আনিকা বিবিদের বক্তব্য, রমজান মাসে আমাদের কথা পুলিশ ভেবেছে এটা আমাদের বড় পাওনা। ঈদ উৎসবে সকলকে খুশি দেখতে চান নবি। সূরা আরাফের ২৬ সূরায় বলা হয়েছে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম সন্তান! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের পোশাক দান করেছি , যাতে তোমরা তোমাদের লজ্জা নিবারণ করতে পারো এবং সভা হিসেবেও আর তাকওয়ার পোশাক সেই তো উত্তম। পোশাক পড়ার ক্ষেত্রেও কিছু বিধান মুসলিম ধর্মের অনুসারীরা পালন করেন। নিয়ম পোশাক পরিধানে ডান হাত ও পায়ে পড়তে হবে। খুলতে হবে বাঁদিকে। হাদিস শরিফে আছে রাসুল ( সা,:) যখন জামা পরিধান করতেন তখন ডানদিক থেকে শুরু করতেন। ঈদে পোশাকের এক গুরুত্ব অপরিসীম।
বিকেলে মঙ্গলকোট গ্রামের কারিগর পাড়ায় মাজার শরিফে এক বিশাল ইফতার পার্টির আয়োজন হয়। প্রায় ছ শো র বেশি ধর্মপ্রাণ মানুষ ইফতারে যোগ দেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মঙ্গলকোট থানার আই সি মধুসূদন ঘোষ। তিনি সম্প্রীতির মেলবন্ধন বজায় ব্রাখার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। ইফতার পার্টিতে উপস্থিত মোল্লা ওয়াসিম আক্রাম, সম্রাট মুন্সি, আবুল কায়ুম প্রমুখ হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতিকে স্মরণ করে বলেন, মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান।